এখনো স্বপ্ন দেখি কাঞ্চন নগরে একটা কলেজ হবে, তার বাস্তবতা কতদূর।
সবুজে গেরা কাঞ্চন নগর। নামটা যেমন সুন্দর তেমনি এলাকাটা ও সুন্দর। এই গ্রামের মধ্যে আছে চা-বাগান, রবার বাগান, ফরেস্ট বাগান এবং ফরেস্ট অফিস। শিক্ষার জন্য আছে উচ্চ বিদ্যালয় , মাদ্রাসা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন ও হাফেজি মাদ্রাসা। এই গ্রামে আছে খাল ও খেলার মাঠ। আছর একটি সেবাবাহিনী ক্যাম্প ও একটি পুলিশ ক্যাম , মসজিদ আছে, আছে মন্দির , আশ্রম কেন্দ্র আছে, আছে পর্যটন ও শিল্প এলাকা।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সময় অনেক মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত বরণ করেন। আছে ইউনিয়ন পরিষদ, দায়িত্ব পালন করছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও। ১৯৮৫ সালে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে তৎকালীন প্রশাসক কাঞ্চন নগর ইউনিয়নকে দুইটি গ্রামে ভাগ করেন। কাঞ্চনপুর এবং মানিকপুর এই দুইটি গ্রাম নিয়ে গটিত হয় ৭নং কাঞ্চন নগর ইউনিয়ন পরিষদ।
ফটিকছড়ি উপজেলার পূর্বাংশে কাঞ্চননগর ইউনিয়নের অবস্থান। উপজেলা সদর থেকে এ ইউনিয়নের দূরত্ব প্রায় ১৩-১৪ কিলোমিটার। এ ইউনিয়নের পশ্চিমে রয়েছে পাইন্দং ইউনিয়ন, ও ফটিকছড়ি পৌরসভা, দক্ষিণে ফটিকছড়ি পৌরসভা ও লেলাং ইউনিয়ন। পূর্বে খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়ন, এবং উত্তরে খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার লক্ষ্মীছড়ি ইউনিয়ন, ও মানিকছড়ি উপজেলার মানিকছড়ি ইউনিয়ন।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে শস্য ভাণ্ডার হিসাবে পরিচিত এই কাঞ্চননগর ইউনিয়ন।কাঞ্চননগর ইউনিয়ন থেকে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন সবজী চট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে যোগান দিয়ে থাকে। বিশেষ করে মুলা, বেগুন (বিশেষ জাতের শুতা বেগুন), মিষ্টি মরিচ, ফুলকপি, পাতাকপি, শিম, মিষ্টি কুমড়া, দেশীয় জাতের আলু, মিষ্টি আলু, বিভিন্ন প্রজাতির শাক সবজী। চট্টগ্রামের সিংহভাগ সবজি এই ইউনিয়ন থেকে সরবরাহ করা হয় বলে অধিকাংশের অভিমত।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কাঞ্চননগর ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যার অবস্থান ২৯,২৫৮ হলেও বর্তমান ৪০ হাজারের কাছাকাছি।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কাঞ্চননগর ইউনিয়নের সাক্ষরতার হার ৩৩.৮% হলেও বর্তমান ৪৪.৫, এ ইউনিয়নে নতুন ২টিসহ ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি দাখিল মাদ্রাসা, ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসাসহ রয়েছে ৫টি কিন্ডারগার্টেন ও হাফেজী মাদ্রাসা।
তবে নেই একটি কলেজ,
একটি কলেজের জন্য দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতি বছর ৩শ থেকে ৪শ নতুন শিক্ষার্থীর।
কলেজ কি হবে..?? কাঞ্চননগরে।
ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চন নগর ইউনিয়নে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও চারটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে প্রতিবছর ৪শতাধিক শিক্ষার্থী এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফলাফলেও উপজেলার মধ্যে ভালো একটা অবস্থানে থাকে এই বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা । কিন্তু এর পরও বিপাকে পড়তে হয় তাদের,
কেননা কাঞ্চন নগর গ্রামে নেই কোনো কলেজ। কলেজে পড়তে হলে যেতে হয় (১৪থেকে১৫) কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে উপজেলার বিভিন্ন কলেজ গুলোতে। যা একজন শিক্ষার্থী ও পরিবারের জন্য ব্যয় বহুল।
শুধু কাঞ্চন নগরের শিক্ষার্থীদের নয়, এ দুর্ভোগে পোহাতে হয় প্বার্শবর্তী বেড়াজালী ইউপির শিক্ষার্থীদেরও, আগামীতে একই সমস্যার সম্মুখীন হবে কাঞ্চন নগরে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত আরো দু’টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে এসএসসির পর ছেলেরা দূরবর্তী কলেজে ভর্তি হতে পারলেও মেয়েদের বেলায় তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে এখানকার মেয়ে শিক্ষার্থীদের বিশাল একটা অংশ এসএসসির পর শিক্ষা থেকে ঝরে পড়তে হচ্ছে বা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তাই ফটিকছড়ি উপজেলা কাঞ্চন নগরে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হলে অত্র এলাকার শিক্ষার হার এবং শিক্ষার মান আরো বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে কাঞ্চননগরে একটি কলেজের আশায় দিন গুনছে সচেতন এলাকাবাসী ও হাজারো শিক্ষার্থী ।
আশা করি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় জনপ্রতিনিধি, ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টির প্রতি সুনজর দেবেন।
লিখেছেন, ফোরকান মাহমুদ
সম্পাদক, দৈনিক ফটিকছড়ি
কাঞ্চন নগর সংবাদ