সিরাত মন্জুরঃ নানা প্রতিশ্রুতির ফুলজুরি এবং প্রচার প্রচারণায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইবিএম)-এ নির্বাচন হলেও আগামীকাল ১৬ই মার্চ ফটিকছড়িতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ নির্বাচন।
কাঙ্ক্ষিত সেবা এবং উন্নয়নের পাশাপাশি আধুনিক পৌরসভা করতে পারবেন, এমন কাউকে নির্বাচিত করতে চান ভোটাররা। অন্যদিকে নানা প্রতিশ্রুতির ফুলজুরি এবং আধুনিক পৌরসভা গঠন করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা। শেষ মুহূর্তে উঠান বৈঠক,পথসভা,চা-চক্রের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে পৌরসভার অলিগলি ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে নির্বাচনের এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে সমর্থকরা নানা ধরনের প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছে। কেউ মাইকের মাইক্রোফোন হাতে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে গান ও কবিতা আকারে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। কেউবা আবার চা খেতে খেতে পছন্দের প্রার্থীর ব্যাপারে মেতে উঠেছেন না না খুশ গল্পে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে জেতাতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় নেমেছে দলটির কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে নির্বাচনের এমন উৎসবমুখর পরিবেশ দেখে আনন্দিত ভোটাররাও, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট প্রদানের মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে চান তারা।
নাজিরহাট পৌর নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর মিলিয়ে ১৩ টি পদে মোট ৫৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার মধ্যে মেয়র পদে ভোটে লড়াই আছেন ৫ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এ কে জাহেদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোবাইল প্রতীকে আনোয়ার পাশা ও চামচ প্রতীকে জাহাঙ্গীর চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ মার্কা প্রতীকে ইসমাইল গণি, নারিকেল গাছ প্রতীকে নাসির উদ্দিন চৌধুরী।
এদিকে দলীয় পদ-পদবীর বাইরেও সৎ ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন এ কে জাহেদ চৌধুরী। তবে বিএনপি-জামাত ও হেফাজত অধ্যুষিত এলাকা বলে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখা একটু কঠিন হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে নৌকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জগ মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসমাইল গণি। তরুণ এই আইনজীবী সৎ ও নীতিবান ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হলেও একসময় জামাত-শিবির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। এ সুবাধে জামাত-বিএনপির বিশাল ভোট ব্যাংক তার দিকে সমর্থন দিচ্ছে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। যদিও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসমাইল গণির দাবি করছেন তিনি জামাত-শিবিরের রাজনীতির সাথে কখনোই জড়িত ছিলেন না।
এছাড়াও অন্য প্রার্থীরা তরিকতপন্থী হওয়ায় ইসমাইল গনী কওমী ঘরোনার ভোটগুলো পাবে বলে আশা করছেন।
এবার নাজিরহাট পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪৪ হাজার ৭ শত ৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৩ হাজার ৯ শত ৩০ জন ও নারী ভোটার রয়েছেন ২০ হাজার ৮ শত ৫৬ জন।
জেলা সহকারী আঞ্চলিক কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার তারিফ উজ্জামান জানান, পৌর নির্বাচনকে অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নেওয়া হচ্ছে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা।শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় টহলে থাকবেন পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা।