ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)
সকাল থেকে সবার চোখে-মুখে ছিল উচ্ছ্বাস, মনে ছিল নতুন এক অভিজ্ঞতার অপেক্ষা। অবশেষে কুমিল্লায় জমজমাট একদিন কেটেছে আইআইইউসি ফটিকছড়ি ফোরামের। গত বুধবার দিনভর মেতেছিল ফোরামের অন্তত অর্ধশতাধিক সদস্য। ফোরামের বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ ও পুনর্মিলনীটি ছিল দারুণ উপভোগ্য।
সদস্যদের এবারের গন্তব্য ছিল নয়নাভিরাম কুমিল্লার একটি শহর, যেখানে মিশে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ।
সকালে চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেট থেকে দুটি বাসে করে যাত্রা শুরু হয় তাদের। শুরুতেই সফরের সাফল্য ও নিরাপত্তার জন্য সবাই মিলে দোয়া করা হয় এবং খবী ঝড়ষঁঃরড়হ এর সৌজন্যে টি-শার্ট বিতরণ করা হয়। সবার চোখে-মুখে ছিল উচ্ছ্বাস, মনে ছিল নতুন অভিজ্ঞতার অপেক্ষায়।
প্রথম গন্তব্য ছিল কুমিল্লা বার্ডে সবুজের মাঝে শান্ত এক আশ্রয়স্থলে। সেখানে চামচ-মার্বেল দৌড়, সুই-সুতা প্রতিযোগিতার মতো মজার খেলাধুলায় অংশ নিয়ে সবাই দারুণ সময় কাটায়। এরপর যোহরের নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের পর সকলে রওনা দেন শালবন বিহার, জাদুঘর ও বৌদ্ধবিহার পরিদর্শনে।
শালবন বিহারে পৌঁছে সবাই যেন এক নিমিষে হারিয়ে যায় ইতিহাসের গভীরে। পুরনো স্থাপত্যের গায়ে হাত রেখে অনুভব করে শত শত বছর আগের সময়কে। তবে সেখানে শুধু ইতিহাস চর্চাই হয়নি, মজার খেলাধুলাও ছিল জমজমাট পিলো পাসিং, বেলুন দৌঁড়, দড়ি টানাটানি সব মিলিয়ে আনন্দের কমতি ছিল না সকলের।
সবচেয়ে প্রতীক্ষিত পর্ব ছিল র্যাফল ড্র। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা, যা সবার মাঝে আরও বাড়িয়ে দেয় উচ্ছ্বাসের মাত্রা।
এই আনন্দময় আয়োজনে ছিল আরও একটি বিশেষ সংযোজন ফটিকছড়ি ফোরাম আইআইইউসি’র ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার উন্মোচন। এটি শুধু একটি তারিখের হিসাব রাখার মাধ্যম নয় বরং ফোরামের ঐতিহ্য ও সাফল্যের প্রতীক হয়ে থাকবে বলে সদস্যরা মনে করেন।
সফরের পুরো আয়োজনে নেতৃত্ব দেন ফটিকছড়ি ফোরাম আইআইইউসি’র সভাপতি দাউদ রহমান, আর সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক তালিব হোসেন রোমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ডেপুটি রেজিস্ট্রার সরোয়ার আজম ফারুকী, অন্যতম সিনিয়র মেম্বার ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত চৌধুরী রাব্বি, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইফরাদ উদ্দীন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাদমান রাফিদ, সাবেক সহ-সভাপতি আলী মর্তূজা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মুন্না, সদ্য সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইরফানুর রহমান এবং গেস্ট হিসেবে ছিলেন ফার্মাসী ডিপার্টমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু সাইদ।
পুরস্কার বিতরণী ও মাগরিবের নামাজের পর সবাই চট্টগ্রামের পথে রওনা দেন। একদিনের এই ভ্রমণ শুধু আনন্দই দেয়নি, বরং সবাইকে আরও কাছাকাছি এনেছে, তৈরি করেছে ভ্রাতৃত্বের এক নতুন সেতু। দাবী করেন সবাই।
ফোরামের সভাপতি দাউদ রহমান বলেন, ‘ফটিকছড়ি ফোরাম আইআইইউসি’র এই আয়োজন অংশগ্রহণকারীদের মনে বহুদিন গেঁথে থাকবে।’